• রবিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪১
সর্বশেষ :
ঝাঁকঝমকপূর্ণ আয়োজনে ওব্যাট থিংক ট্যাংক খুলনার সপ্তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন আরো ৩৬ টি আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেছে বিএনপি চাঁদা তুলতে গিয়ে ছাত্রদল নেতাসহ আটক ৩ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে ঢাকা-ময়মনসিংহে ট্রেন চলাচল বন্ধ বাউল আবুল সরকারের মুক্তির দাবিতে কিশোরগঞ্জে সার্বজনীন মানববন্ধন ময়মনসিংহে হাসপাতাল-ক্লিনিকে র‌্যাবের অভিযান , ৫ লাখ টাকা জরিমানা উপকূলীয় শ্যামনগর, আশাশুনি ইউনিয়ন পরিষদের রূপকল্প ও উন্নয়ন পরিকল্পনায় প্রশিক্ষণ কর্মশালা কালিগঞ্জ থেকে ভেটখালী পর্যন্ত রাস্তা ৩৪ ফুট প্রশস্ত করার দাবিতে শ্যামনগরে মানববন্ধন ডিজিটাল সহিংসতা প্রতিরোধে শ্যামনগরে র‍্যালি, মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন নির্বাচিত হতে পারলে খাজরা ইউনিয়নে জলাবদ্ধতা ও কোনো কাঁচা রাস্তা : সাবেক এমপি কাজী আলাউদ্দিন

দীর্ঘ এক যুগ পর পাইকগাছার কপিলমুনিতে ৪শ বছরের ঐতিহ্যবাহী মহা বারুনীমেলার আয়োজনে চলছে জোর প্রস্তুতি 

প্রতিনিধি: / ২৫৮ দেখেছেন:
পাবলিশ: বুধবার, ৬ মার্চ, ২০২৪

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা ( খুলনা ): সুন্দরবন উপকূলীয় পাইকগাছার কপোতাক্ষ নদের তীরের ঐতিহ্যবাহী মহা বারুনী মেলা আয়োজনে দীর্ঘ দিন পর এলাকাবাসী একত্রিত হয়েছে কপিলমুনিতে। ৪শ বছরের ঐতিহ্য কপিলমুনির এই ঐতিহ্যবাহী বারুনী মেলা ফিরিয়ে আনতে কয়রা পাইকগাছার  সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মোড়লের নির্দেশনায় পুনরায় প্রাণ ফিরে পেতে চলছে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী কপিলমুনির বারুনী  মেলা।  ইতোমধ্যে দফায় দফায় আলোচনায় প্রাণ ফিরেছে আয়োজকদের মধ্যে।

বরাবরের ন্যায় কপিলেশ্বরী কালী মন্দিরের সভাপতি চম্পক কুমার পালকে সভাপতি,  কপিলমুনি ইউপি চেয়ারম্যান কওছার আলী জোয়ার্দার কে সাধারণ সম্পাদক ,সাধন চন্দ্র ভদ্র কে কোষাধ্যক্ষ ও মাহমুদ আসলামকে মেলা কমিটির  পরিচালক করে   করে  ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট বারুনী মেলা উদযাপন কমিটি গঠিত হয়েছে। চলছে পৃথক আরো অন্তত ১১টি উপ-কমিটি গঠনের কাজ। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সব কিছু ঠিক-ঠাক থাকলে পবিত্র ঈদুল ফিতরের পর দিন থেকে মেলার আয়োজনে পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছে আয়োজক গোষ্ঠী।

এদিকে দীর্ঘ প্রায় ১ যুগ পর কপিলমুনির ঐতিহ্যবাহী মহা বারুনী মেলা উদযাপনের  খবরে চলছে সাজ সাজ রব। আয়োজক সহ সর্বসাধারণের মধ্যে চলছে উৎসবের আমেজ। ইতোমধ্যে মেলার সারথী হতে আগ্রহ প্রকাশ করে যোগাযোগ শুরু করেছে বিভিন্ন সার্কাস, যাত্রাগাণ, যাদু প্রদর্শনী, পুতুল নাচসহ চিত্ত বিনোদনের নানা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী।

মেলা আয়োজক গোষ্ঠীর সভাপতি ও কপিলেশ্বরী কালী মন্দির কমিটির সভাপতি চম্পক কুমার পাল জানান, কপিলমুনি মহা বারুনী স্নানের ইতিহাস সুদীর্ঘ ও পৌরানিক কাহিনী নির্ভর। মেলার ইতিহাস উদ্বৃতি দিয়ে তিনি জানান, দ্বাপর যুগে প্রায় ৫ হাজার বছর আগে পুন্ড্র নগরের অধিপতি বসুদেবের ছেলে বাসুদেবের বৈমাত্রেয় ভাই কপিলদেব কপোতাক্ষের কালীবাড়ী ঘাটের বটবৃক্ষমূলে দীর্ঘ তপধ্যানে মগ্ন থেকে সিদ্ধিলাভের সময় থেকে এখানে বারুনী স্নান অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

 

তিনি বলেন, শ্রীকৃষ্ণ বাসুদেবের সাথে বসুদেবের ছেলে বাসুদেবের বসচা ও নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি অন্যদিকে বাসুদেবের শ্বশুর জরাসন্ধের পুন্ড্রনগরের দখল নিতে বসুদেবকে হটাতে ১০০ নৃপতিকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। সে লক্ষ্যে হত্যা যজ্ঞ শুরু করলে কপিল তা প্রতিরোধে সিদ্ধিলাভের আশায় বিভিন্ন স্থানে তপধ্যান শুরু করেন। একপর্যায়ে কপিলমুনির কালীবাড়ী ঘাটে তপধ্যানে তিনি সিদ্ধলাভ করেন। সেই থেকে তার শ্মরনে প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধূকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে কপোতাক্ষ স্নানের মাধ্যমে বারুনী স্নানোৎসব পালন করে অসছে।

মতান্তরে কথিত আছে বরুণ জলের দেবতা, আর বারুনী তার স্ত্রী। তার স্মরণে সনাতনীরা মধূকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে বারুনী স্নান করে আসছে। তাদের বিশ্বাস, এই তিথিতে গঙ্গার জল এই স্থানে প্রবাহিত হয়। আর তখন এখানে স্নান করলে পূত ও পবিত্র হওয়া যায়। আর সেই থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূণ্য লাভের আশায় বারুনীস্নান করে আসছে।

মেলার পরিচালক এম মাহমুদ আসলাম জানান, ২০১০ সালে সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয় যেকোন ধরনের মেলা বা বানিজ্যিক আয়োজনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা জারী করে। এরপর থেকে মেলা আয়োজনে শুরু হয় মাঠ শূণ্যতা। যদিও এরপর দু’একবার ভিন্ন এলাকায় মেলার আয়োজন হলেও পরবর্তীতে রাজনৈতিক সমন্বয়হীনতা, মতদ্বন্দ্বসহ নানাবিধ সংকটে মেলার কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শুধুমাত্র বারুনী স্নানের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে ঐতিহ্যবাহী বারুনী মেলা।

এভাবে প্রায় এক যুগেও মেলা অনুষ্ঠিত না হওয়ায় এক প্রকার অস্তিত্ব সংকটে পড়ে ঐতিহ্যবাহী বারুনী মেলা।  কপোতাক্ষ খননে নব্যতা ফিরে আসায় শুরু হয় জোয়ার-ভাটা। সর্বপরি মেলার অনুকুল পরিবেশ ফিরে আসায় দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর ফের নতুন করে শুরু হয়েছে বারুনী মেলার জোর প্রস্তুতি। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে ঈদের একদিন পর শুরু হতে যাচ্ছে ঐতি্েহ্যর কপিলমুনি মহাবারুনী মেলা।

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদে পর্বনপ্রিয় বাঙালির মাঝে বার বার ফিরে আসুক বারুনী মেলা, এমনটাই প্রত্যাশা জনপদের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের। পরিশেষে কপিলমুনি থেকে   হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী বারনী মেলা অনুষ্ঠানের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা কয়রা পাইকগাছার সংসদ সদস্য রশীদুজ্জামান মোড়ল ও খুলনা ডিসি এসপি মহোদয় সহ সকলের হস্তক্ষেপ  কামনা করেছেন এলাকাবাসী।


এই বিভাগের আরো খবর
https://www.kaabait.com